চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে আনসার কর্মীদের বেতনের নামে কোটি টাকা হরিলুট

Passenger Voice    |    ০৯:০১ এএম, ২০২১-০৭-০৩


চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে আনসার কর্মীদের বেতনের নামে কোটি টাকা হরিলুট

দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে কর্মরত আনসার কর্মীদের বেতন-বোনাসের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে এ ধরনের দুর্নীতির ঘটনা ধরা পড়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৮ সাল থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের আনসার কর্মীদের বেতন ও বোনাস দেখিয়ে প্রায় কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে বিমানবন্দর নিরাপত্তা শাখার এক কর্মকর্তা, থানা আনসার ভিডিপি, প্রশিক্ষক (টিআই), প্লাটুন কমান্ডার (পিসি), আনসার ক্যাম্প মনিটরিং সদস্য, রাইটারসহ অন্তত ১০ জন জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শাহ আমানত বিমানবন্দরের ম্যানেজার (এয়ারপোর্ট ম্যানেজার) উইং কমান্ডার ফরহাদ হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শাহ আমানত বিমানবন্দরের ওই সময়ে আনসার কর্মীদের বেতন ও বোনাসের তালিকা চেয়ে চট্টগ্রাম জেলা আনসার কমান্ডারের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিয়ন্ত্রণাধীন ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে নিজস্ব জনবলের পাশাপাশি এক হাজার ৭২৬ আনসার কর্মী আছেন। বেবিচক থেকে তাদের বেতন-বোনাস দেওয়া হয়। এর মধ্যে ঢাকায় এক হাজার ২২৮, শাহ আমানত বিমানবন্দরে ২০০ এবং অন্যরা সিলেট ওসমানীসহ অন্যান্য বিমানবন্দরে নিয়োজিত। কিন্তু প্রতি মাসে নানা কারণে ২০-২৫ জন কর্মীর পদ শূন্য থাকে। চাকরিচ্যুতি অথবা চাকরির মেয়াদ শেষসহ নানা ঘটনায় ক্যাম্পগুলোতে এসব পদ খালি থাকে। কিন্তু তাদের নামেও বেতন নেওয়া হয়।

প্রতি মাসে এভাবে ভুয়া বেতন দেখিয়ে অন্তত দুই থেকে তিন লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ ছাড়া প্রতিবছর বিভিন্ন উৎসবেও তাদের নামে বোনাস নেওয়া হয়। গত তিন বছর এভাবে প্রায় কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে অন্যত্র চলে যাওয়া কয়েকজন আনসার কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমকালকে জানান, ক্যাম্পের রাইটার, মনিটরিং সদস্যসহ অন্তত ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারী পরস্পর যোগসাজশে শূন্য পদগুলোর বিপরীতেও বেতন-বোনাস তুলে তা ভাগভাটোয়ারা করে নেন। ক্যাম্পগুলোর দেওয়া আনসার সদস্যের তালিকার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই।

বেবিচকের শাহ আমানত বিমানবন্দরের নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, আনসারদের বেতন-বোনাস নিয়ে অনিয়ম ও আত্মসাতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি কাজ করছে। প্রতি মাসে তিনিও টাকা পেতেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা অস্বীকার করেন তিনি।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, আনসার কর্মীদের বেতনের নামে টাকা আত্মসাৎ করলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে আনসার কর্মীদের বেতনের নামে অর্থ লোপাটের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ম্যানেজারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।